যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান কোনো পদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন: হাতে-কলমে, পথে-ঘাটে, দেশে-বিদেশে, হাতে-নাতে, কোলে-পিঠে, তেলে-বেগুনে, বুকে-পিঠে, হাটে- বাজারে, ঘরে – বাইরে, খেতে – খামারে, সুখে – দুঃখে, হাতে – কলমে, জলে – স্থলে, ইত্যাদি।
অলুক তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে?
যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে। অর্থাৎ যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের দ্বিতীয়াদি বিভক্তি লোপ হয় না, তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন: গায়ে পড়া, হাতে গড়া, পায়ে পড়া, মামার বাড়ি, হাতে কাটা, কলে-ছঁটা, ঘিয়ে ভাজা, বানেভাসা ইত্যাদি।
১. অলুক তৎপুরুষ — তৃতীয়া –উদাহরণ:
- ঘিয়ে ভাজা
- হাতে গড়া
- রোদেপোড়া
- সাপে কাটা
- তেলে ভাজা
- জলে ভেজা
- তেলে মাখা
- হাতে কাটা ইত্যাদি।
২. অলুক তৎপুরুষ – চতুর্থী — উদাহরণ:
- তেলের শিশি
- খেলার মাঠ
- বসার ঘর
- পড়ার টেবিল
- চায়ের কাপ ইত্যাদি।
৩. অলুক তৎপুরুষ- পঞ্চমী– উদাহরণ:
- তিলের তেল
- বৃষ্টির ফোঁটা
- চোখের জল
- বিদেশ-থেকে-আসা
- দূর-থেকে-দেখা
৪. অলুক তৎপুরুষ- ষষ্ঠী– উদাহরণ:
- ভোরের পাখি
- বালির বাঁধ
- রাজার ছেলে
- তাসের ঘর
- মাথার কেশ
- চোখের বালি
- ডুমুরের ফূল
- ঈদের চাঁদ ইত্যাদি।
৫. অলুক তৎপুরুষ- সপ্তমী– উদাহরণ:
- গায়ে পড়া
- হাতে আঁকা
- দুধে আলতা
- সোনায় সোহাগা
- মনে রাখা
- নাকে খত
- অরণ্যে রোদন ইত্যাদি।
৬. অলুক উপপদ তৎপুরুষ –উদাহরণ:
- বানে ভাসা
- গায়ে পড়া
- জলে ভাসা ইত্যাদি।
অলুক বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে?
‘গায়ে হলুদ’ পদটির ব্যাসবাক্য করা হয় ‘গায়ে হলুদ দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে’ অনুরূপ ‘হাতে খড়ি’ — ‘হাতে খড়ি দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে ‘ । এ দুটি সমাসবদ্ধ শব্দের পরপদের অর্থ প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয় না। অর্থাৎ ‘হলুদ’ বা ‘খড়ি’ বোঝায় না, অনুষ্ঠান বিশেষকে বোঝায়। সে জন্য ‘গায়ে হলুদ’ ও ‘হতেখড়ি’ অলুক তৎপুরুষ নয়, বরং এরা অলুক বহুব্রীহি সমাস।
পূর্ব বা পরপদের কোনো পরিবর্তন বা লোপ না পেয়ে যে বহুব্রীহি সমাস গঠিত হয়, তাকে অলুক বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন: গলায় গামছা, মাথায় পাগড়ি, হাতে বেড়ি, মাথায় ছাতা, মুখে মধু ইত্যাদি।
আরো পড়ুন:
ভাষা বলতে কি বুঝায় ব্যাখ্যা কর উদাহরণ সহ?
Leave a Reply