অংশীদারি চুক্তিপত্র কি বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কাকে বলে?

অংশীদারি চুক্তিপত্র কি বা অংশীদারি চুক্তিপত্র কাকে বলে

অংশীদারি ব্যবসায়ের অংশীদারদের মধ্যকার চুক্তির বিষয়সমূহ যে দলিলে উল্লেখ বা লিপিবদ্ধ করে, তাকে অংশীদার চুক্তিপত্র বলে।

বাংলাদেশে বহাল ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইনের ৫ ধারার মতে, “অংশীদারি সম্পর্ক সৃষ্টি হয় চুক্তি থেকে, সামাজিক মর্যাদা থেকে নয়”।

অংশীদারি চুক্তিপত্র অনুযায়ী অংশীদারি ব্যবসায় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন করা হয়। অর্থাৎ চুক্তিপত্র অংশীদারি ব্যবসায়ের ভবিষ্যৎ দিক-নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। চুক্তিতে অংশীদারি ব্যবসায়ের ভবিষ্যত সমস্যার সমাধান করার প্রয়োজনীয় সকল করণীয়সমূহ নির্ধারণ করা হয়। 

অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তি মৌখিক, লিখিত, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত হতে পারে। অংশীদারি চুক্তিপত্র লিখিত হতে হবে তার কোনো আবশ্যকতা নেই। তবে ব্যবসায়ের ভবিষ্যত সমস্যার সমাধান করার জন্য চুক্তি লিখিত হওয়া উচিত ও সতর্কতার সাথে করা উচিত।

যেকোনো অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করার জন্য সেখানে চুক্তি থাকা বাধ্যতামূলক। আর চুক্তিটি লিখিত হওয়া বঞ্ছনীয়। চুক্তি লিখিত হওয়ার মধ্যে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবে চুক্তি মৌখিক, লিখিত ও নিবন্ধিত হতে পারে। এজন্যই বলা হয়, চুক্তিই অংশীদারি ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি। যেখানে চুক্তি নেই সেখানে অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করা সম্ভব নয়। তাই চুক্তি অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

অংশীদারি চুক্তিপত্রে সাধারণত যে বিষয়সমূহ উল্লেখ থাকে: সকল অংশীদারের মূলধনের অনুপাত, লাভ-ক্ষতি বণ্টনের অনুপাত, অংশীদারের দায়িত্ব ও অধিকার সম্পর্কে তথ্য, অংশীদারদের পারিশ্রমিক, ব্যবসায় কিভাবে পরিচালনা করবে সে পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, অংশীদারি ব্যবসায়ে ঋণ গ্রহণ পদ্ধতি, বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি সম্পর্কিত তথ্য ইত্যাদি।

অংশীদারি চুক্তিপত্রে যে বিষয়সমূহ থাকে:

  • অংশীদারি ব্যবসায়ের নাম কি হবে তা উল্লেখ থাকে।
  • ব্যবসায়ের ঠিকানা উল্লেখ থাকে।
  • অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য।
  • সংগঠনের কার্যকাল ও স্বায়িত্ব উল্লেখ থাকে।
  • প্রত্যেক অংশীদারের নাম, ঠিকানা ও পেশা কি তা লিপিবদ্ধ থাকে।
  • প্রত্যেক অংশীদারের মূলধনের পরিমান ও পরিশোধ পদ্ধতি লিপিবদ্ধ থাকে।
  • অংশীদারি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার নিয়মসমূহ উল্লেখ থাকে।
  • ভ্যবসায়ের লাভ ও লোকসান বণ্টনের প্রক্রিয়া উল্লেখ থাকে
  • কোন কোন অংশীদার সংগঠন সরাসরিভাবে পরিচালনা করবে তাদের পরিচিতি উল্লেখ থাকে।
  • অংশীদারদের দায়িত্ব, ক্ষমতা ও অধিকার কি কি তা উল্লেখ থাকে।
  • অংশীদারদের অবসরগ্রহণ ও বহিষ্কার পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্য থাকে।
  • ভবিষ্যত সমস্যার সমাধান পদ্ধতি উল্লেখ থাকে।
  • বিরোধ সহজ করতে বিভিন্ন সমাধান পদ্ধতি।
  • ব্যবসায়ের জন্য ঋণ গ্রহণের পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্য উল্লেখ থাকবে।
  • অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলোপসাধন পদ্ধতি লিপিবদ্ধ থাকে, ইত্যাদি।

Related posts

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.