অনলাইনে ইনকাম করার উপায় | অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি জেনে নিন

অনলাইনে ইনকাম করার উপায় | অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি জেনে নিন

অনলাইনে ইনকাম করার হাজরো উপায় রয়েছে, তবে আপনাকে জানতে হবে যে আপনি আপনার মূল্যবান সময় কোথায় ব্যয় করছেন। বর্তমানে অনলাইন ইনকাম করার প্রলোভন দেখিয়ে অনেক স্প্যামিং ওয়েবসাইট বা অ্যাপ মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে এবং অনেক সময় এমনও হয় যে পুরো মাস কাজ করার পর টাকা/ডলার উইথড্র করার সময় প্রতারণার স্বীকার হতে হয়, আর যদি টাকা পেয়েও থাকেন তা খুবই অল্প পরিমানে। তাই বেশিরভাগ মানুষেরই অনলাইন ইনকাম করার প্রতি একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। যদি সঠিক পদ্ধতি জানেন তাহলে অনলাইন থেকে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি যদি সত্যিই অনলাইনে ইনকাম করতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটিতে আমরা অনলাইন থেকে প্যাসিভ ইনকাম করার কিছু উপায় বলবো যেগুলির যেকোনো একটি সম্পর্কে ভালো দক্ষতা অর্জন করে আপনি মাসে হাজারো ডলার ইনকাম করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করার উপায় হিসাবে কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসােইট খোঁজেন তাহলে আমি বলবো আপনি ভুল করছেন কেননা যেকোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইট থেকে কাজ করে যা ইনকাম করবেন তা খুবই সামান্য পরিমানে হবে এবং আপনার অধিক সময় নষ্ট করবে। সুতরাং আপনার মূল্যবান সময় একটি নির্দিষ্ট কাজে ব্যয় করে ঐ কাজে দক্ষতা অর্জন করে মাসে হাজার ডলার ইনকাম করার সুযোগ তৈরি করুন।

অনলাইনে ইনকাম করার উপায় সমূহঃ

  1. ব্লগিং:

আপনি লেখালিখি করতে ভালোবাসেন? যদি হ্যা হয়ে থাকে, তাহলে ব্লগিং আপনার জন্য। ব্লগিং এমন একটি মাধ্যম যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে লেখা প্রকাশ করার  মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। খুবই সহজ কথায়, ধরুন টেকনোলজি বিষয় সম্পর্কে আপনার খুব ভালো জ্ঞান রয়েছে, তাহলে আপনি আপনার ব্লগে টেকনোলজি নিয়ে লেখালিখি করবেন এবং ধীরে ধীরে আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। Related Article: ব্লগিং কি? ব্লগিং কিভাবে শুরু করবো স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

ব্লগিং করে অনলাইনে আয়
                                                      ব্লগিং করে অনলাইনে আয়

আসুন জেনে নেই ব্লগিং থেকে কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করবেন:

A. গুগল এডসেন্স: আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে গুগল এডসেন্স এর সাথে মনিটাইজ করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যখন গুগল এডসেন্স এর সাথে আপনার ওয়েবসাইটটি মনিটাইজ করবেন তখন গুগল আপনার ওয়েবসাইটে এডস দেখানো শুরু করবে, আর যখন কোনো ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে এসে সেই এডস এ ক্লিক করবে তখন আপনার গুগল এডসেন্ন একাউন্টে ইনকাম জমা হবে।

B. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: ব্লগিং এর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পাবেন। বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং লিখে ‍গুগল করে দেখুন, তাহলে দেখতে শুধু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ব্লগাররা হাজার হাজার ডলার আয় করছে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অন্যের পণ্য বিক্রয় করার মাধ্যমে কমিশন লাভ করা অর্থাৎ অন্য কোনো কোম্পানির পণ্য রেফার করে বা বিক্রয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমানে কমিশন পাওয়া। আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর যদি আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক ব্যবহার করে কিছু ক্রয় করে তাহলে আপনি কিছু কমিশন পাবেন।

C. স্পনসর পোস্ট: স্পনসর পোস্ট আপনার ব্লগের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে। অর্থাৎ কোনো কোম্পানি বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আপনার ওয়েবসাইটে তাদের নিজস্ব একটি তথ্যবহুল পোস্ট করতে বলবে যার বিপরীতে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদান করবে। আপনার ওয়েবসাইট যদি খুব জনপ্রিয় হয় তাহলে স্পনসর পোস্ট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

D. নিজস্ব পণ্য বিক্রয় করার মাধ্যমে ইনকাম: আপনার ওয়েবসাইটের পাঠকদের মাঝে আপনার একটি নিজস্ব পণ্য বিক্রয় করার মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন। ধরুন, আপনি একটি রেসিপি ইবুক লিখেছেন, আপনার ইবুকটি আপনার ওয়েবসাইটের পাঠকদের মাঝে সঠিক ভাবে বর্ণনা করে বিক্রি করতে পারবেন।

2. ইউটিউবিং:

ইউটিউবিং হলো YouTube এ ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে মার্কেটিং করা। অনলাইনে ইনকাম করার খুবই জনপ্রিয় আরেকটি মাধ্যম হলে YouTube. বর্তমানে অনেকেই ইউটিউবিং করার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে, এমনকি কেউ কেউ ইউটিউবকে পেশা হিসাবেও বেছে নিচ্ছে। ইউটিউব এর একটি সুবিধা হচ্ছে আপনি যদি ভালো মানের ভিডিও আপলোড করেন তাহলে খুব সহজেই বেশি ভিউস বা ট্রাফিক পাবেন। তাছাড়া, ইউটিউব এর জনপ্রিয়তা বাড়ার কারণ হচ্ছে মানুষ তার দৈনন্দিন কাজ, ভ্রমণ, দক্ষতা, রিভিউ, রেসিপি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে ইনকাম করার সুযোগ পাচ্ছে।

ইউটিউবিং করে অনলাইনে আয়
                                              ইউটিউবিং করে অনলাইনে আয়

YouTube এ আপনি যে বিষয় বা নিশ নিয়ে কাজ করতে পারেন রেসিপি, আনবক্সিং, খাদ্য, ভ্রমণ, সংগীত, কৌতুক, শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করা ইত্যাদি।

ইউটিউব এ ইনকাম কিভাবে হয়? আপনি যখন ইউটিউব এ ভিডিও দেখেন তখন হয়তো দেখে থাকেন ভিডিও’র নিচে এডস বা  ভিডিও’র মাঝখানে হঠাৎ করে এডস চলে আসে। অর্থাৎ ইউটিউব চ্যানেলকে এডসেন্স এর সাথে মনিটাইজ করার মাধ্যমে আয় করা। তাছাড়া আপনি ইউটিউবের মাধ্যমেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন।

3. Freelancing/ফ্রিল্যান্সিং:

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম যেখানে আপনি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন অর্থাৎ আপনার বস আপনিই। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে একটি চুক্তি ভিত্তিক পেশা যেখানে একজন ফ্রিলান্সার কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্মী হিসাবে নিয়োগ না হয়ে তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করে ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদান করে থাকে। ফ্রিল্যান্স মার্কেটে বাংলাদেশ ধীর্ঘদিন ধরেই সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই ফ্রিল্যান্সিং করে সাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে।

আসুন জেনে নেই কি কি কাজগুলি শিখার মাধ্যমে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়:

A. গ্রাফিক্স ডিজাইন: গ্রাফিক্স ডিজাইন খু্বই চাহিদাসম্পন্ন একটি দক্ষতা। আপনি যদি বিভিন্ন ধরণের ডিজাইন করতে বা আঁকাআকি করতে ভালোবাসেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার জন্য। তাছাড়া আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনকে আপনার ক্যারিয়ার হিসাবেও বেছে নিতে পারেন। শুধু গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর দক্ষতা অর্জন করে আপনি মাসে হাজার ডলার অনলাইনে ইনকাম করার সুযোগ তৈরি করতে পারবেন, তার জন্য প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর প্ররিশ্রম।

গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে ইনকাম
                                                                       গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে ইনকাম

গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে আপনাকে কম্পিউটার সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে বা হাতে কলমে ভিজ্যুয়াল ধারণা তৈরি করতে হবে। বর্তমানে যেকোনো ব্যবসায় বা প্রতিষ্ঠানের লগো, ব্যানার, ফটো ইডিটিং, পোর্টফোলিও ইত্যাদি গ্রাফিক্স ডিজাইনের সম্পর্কিত কাজের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা খুবই বেশি।

B. ওয়েব ডিজাইন:

ওয়েব ডিজাইন ফ্রিল্যান্স মার্কেটের একটি বড় প্লাটফর্ম। ওয়েব ডেভেলপাররা ওয়েবসাইট তৈরি করা হতে শুরু করে ওয়েবসাইটের খুঁটিনাটি পরিবর্তন, পরিচালনা ও ডেভেলপ করার ক্ষমতা রাখেন। ওয়েব ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোডিং করার প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে। যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তার কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনা করার জন্য একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন এবং ওয়েবসাইটটি তৈরি ও পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন ওয়েব ডিজাইনার। সুতারং, সহাজেই বলা যাচ্ছে যে একজন ওয়েব ডিজাইনের এর ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে+ ক্যারিয়ার হিসাবে অনেক চাহিদা রয়েছে। একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার হতে পারলে আপনার মাসিক অনলাইন ইনকাম হাজার ডলারের বেশি হবে।

ওয়েব ডিজাইন করে অনলাইনে আয়
                                                                         ওয়েব ডিজাইন করে অনলাইনে আয়

ওয়েব ডিজাইনের কাজে ইনকাম এর পরিমান বেশি তবে একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার হতে হলে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয় এবং কাজ শেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকা প্রয়োজন।

C. ডিজিটাল মার্কেটিং: ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি মাধ্যম যা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বা পণ্যকে প্রচার করে থাকে। আমরা জানি, বর্তমান যুগ ইন্টরনেটের যুগ। এখন মানুষ অনলাইনে সবকিছু কেনাকাটা করতে পছন্দ করে। তাছাড়া সকল কাজকর্ম অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় বর্তমানের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলিও অনলাইন ভিত্তিক করে ফেলছে। সুতরাং, ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে যে ব্যবসায়িক মাধ্যম গড়ে উঠেছে বা অনলাইনভিত্তিক হয়েছে তাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। ডিজিটাল মার্কেটিং করে ফ্রিলান্সাররা হাজার হজার ডলার অনলাইনে ইনকাম করছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয়
                                                                          ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয়

একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার যে বিষয়গুলি সম্পর্কে সম্পূর্ণ দক্ষতা থাকে তা হলো: SEO(Search engine optimization), SEM(Search Engine Marketing), Content marketing, SMM(Social Media Marketing), Affiliate marketing, Email marketing, Mobile marketing, Influencer marketing, Forum marketing ইত্যাদি। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মার্কেট চাহিদা প্রচুর এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আপনি চাইলেই সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং দক্ষতা অর্জন করে আপনার অনলাইনে ইনকাম জার্নি শুরু করতে পারেন। তাছাড়াও বাংলাদেশ সরকার দেশের যুবসমাজকে আত্মকর্মসংস্থান করার লক্ষ্যে উপরের কোর্সগুলি( গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং) ফ্রিতে করাচ্ছে।

LEDP(Learning and Earning Development Project) যা বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ফ্রিতে। সম্পূর্ণ সরকারি খরচে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সসমূহ করতে পারবেন। Registration Link: Course Registration.

D. ডাটা এন্ট্রি:

অনলাইন ইনকাম এর সবচেয়ে সহজ ও দ্রুততম কাজগুলির মধ্যে একটি হলো ডাটা এন্ট্রি। আপনার যদি মাইক্রোসফ্ট অফিস, এক্সেল, এক্সেস এবং টাইপিং এ দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি ডাটা এন্ট্রি কাজ শুরু করতে পারেন। আপনি ফাইবার ওয়েবসাইটে গিয়ে ড্রাটা এন্ট্রি লিখে সার্চ করলে দেখতে পাবেন অনেক ফ্রিল্যান্সাররা শুধু ডাটা এট্রির ওপর কাজ করে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে।

ডাটা এন্ট্রি করে অনলাইনে আয়
                                                                                    ডাটা এন্ট্রি করে অনলাইনে আয়

ডাটা এন্ট্রিতে সফল হতে হলে ইউটিউব এ অনেক ফ্রি কোর্স পাওয়া যায়, ফ্রিতে ভিডিও দেখেই কয়েকদিনেই আপনি ডাটা এন্ট্রির সকল কাজ শিখে ফেলতে পারবেন। ডাটা এন্ট্রির কাজ সব ধরনের ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মে পাওয়া যায়, সুতরাং আগে কাজ শিখুন তারপর মার্কেটপ্লেসে যান। ডাটা এন্ট্রি কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে, আপনি চাইলে সহজেই কিছু ভিডিও দেখে কাজ শিখে আপনার অনলাইনে ইনকাম করার পথ শুরু করতে পারেন।

E. Freelance Writer/আর্টিকেল লিখে আয়: বর্তমানে মানুষ তার মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে হাজার হাজার ডলার অনলাইনে ইনকাম করছে। আপনার যদি ইংরেজির উপর ভালো দক্ষাতা থাকে তাহলে আপনি আর্টিকেল লিখেও আয় করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মগুলিতে গিয়ে Article Writer/Freelance Writer সার্চ দিলে দেখতে পাবেন ফ্রিল্যান্সাররা শুধু তাদের লেখার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভালো মানের এমাউন্ট ইনকাম করছে।

আর্টিকেল লিখে অনলাইনে আয়
                                                                              আর্টিকেল লিখে অনলাইনে আয়

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায়িক কাজে বা ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট প্রয়োজন যার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলি Article Writer/Freelance Writer কে কাজে লাগিয়ে তাদের ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল তৈরি করে নেন। আপনি যদি ভালো মানের লেখার দক্ষতা থাকে তাহলে আপনার ক্লাইন্ট পেতে সহজ হবে এবং ক্লাইন্টদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম দিন দিন বাড়তে থাকবে।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে আপনি আরও যে কাজগুলি করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন: Translation, Video Editing, Animation, Podcast Edition, Virtual Assistant, Business Consulting, Market Research, Project Management ইত্যাদি।

4. সার্ভে করে অনলাইনে ইনকাম:

শিক্ষার্থীদের টাকা ইনকামের একটি জনপ্রিয় উপায় হলো অনলাইনে সার্ভে করা। সার্ভে হলো কানো প্রতিষ্ঠান বা পণ্য/সেবা সম্পর্কে মতামত দেওয়া, পণ্য বা সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। গবেষণা সংস্থাগুলি সর্বদা নতুন পণ্য পরীক্ষা করার জন্য বিশ্বব্যাপী সার্ভে তৈরি করে থাকে। অনলাইনে সার্ভে করার জন্য অনেকগুলি ওয়েবসাইট রয়েছে তবে মনে রাখতে হবে সার্ভের উপর ভিত্তি করে অনেকগুলি ফেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করবে।

তবে বেশিরভাগ সার্ভে সাইটগুলি বাংলাদেশ সাপোর্ট করে না, জনপ্রিয় সার্ভের মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম করতে হলে আপনার ভিপিএস আর আইপি এইদুইটা অবশ্যই ইউএস রেসিডেন্স হওয়া লাগে। তাই বাংলাদেশীরা সার্ভে সাইটগুলিতে কাজ করার তেমন সুযোগ পায় না। তবে অনেকে তাদের আইপি ও লোকেশন পরিবর্ত করে কাজ করছে। সার্ভের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে পেমেন্ট মেথড, বাংলাদেশে এমন কোনো পেমেন্ট মেথড নাই যে খুব সহজে বিদশী সইটগুলি থেকে ডলার ট্রান্সফার করার। বেশিরভাগ সার্ভে সাইটগুলি তাদের পেমেন্ট মেথড হিসেবে পেপাল ব্যবহার করে, যা বাংলাদেশে নেই।

তবে অনেকে তাদের ভিপিএস এবং আইপি পরিবর্তন করে কাজ করছে। সার্ভে করার জন্য আপনার যা দরকার হবে:

  • Laptop/Computer
  • Internet Connection
  • USA Residential IP (VPS/Proxy)
  • USA  Address
  • Real USA Phone Number for site verification

উপরের সার্ভিসগুলো আপনি ক্রয় করতে পারবেন বাংলাদেশী কিছু সংস্থা থেকে। শুধু সার্ভে করে অনেকে হাজার ডলার অনলাইনে ইনকাম করছে।

5. অনলাইন টিউটর:

আপনার যদি ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে অনলাইনে এমন কিছু জনপ্রিয় প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনি ইংরেজি শিখিয়ে মাসে ১০০০ ডলারের বেশি উপার্জন করতে পারবেন। অনলাইন টিউটরের ক্ষেত্রে সাধরনত প্রতিটি ক্লাসের জন্য আপনি ১০-১৫ ডলার পর্যন্ত নির্ধারন করতে পারবেন। যদি আপনার ইংরেজি সম্পর্কে ভালো দক্ষতা থাকে এবং নুতুন মানুষদের সাথে কথা বলার কথা বলা এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে অনলাইন টিউটর আপনার জন্য উপযুক্ত। অনলাইন টিউটরিং করে আপনি ভালো পরিমানে ইনকাম করতে পারবেন।

অনলাইন টিউটর প্লাটফর্ম সমূহ:

অনলাইন টিউটরিং এর মাধ্যমে যে শুধু ইংরেজি শিখানো হয় তা কিন্তু নয়, আপনি আপনার ভাষা এবং নির্দিষ্ট কোনো বিষয় অনলাইনে শিখাতে পারবেন। আপনি আমাদের বাংলা ভাষা শিখিয়েও অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। 

6. ছবি এবং ফুটেজ বিক্রয় করে অনলাইনে ইনকাম :

আপনি যদি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন বা ফটোগ্রাফি করা আপনার সখ তাহলে আপনি আপনার তোলা ছবি বিক্রয় করে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। এমন অনেকগুলি সাইট রয়েছে যেগুলি আপনাকে আপনার স্টক ফটো এবং ফুটেজ আপলোড করতে দেয়। এই ওয়েবসাইটগুলি থেকে মানুষ ছবি বা ফুটেজ ক্রয় করে থাকে, যখন কোনো ভিজিটর আপনার লাইসেন্সকৃত ছবি ক্রয় করবে তখনই আপনার ইনকাম হবে। ছবি এবং ফুটেজ বিক্রি করা ফটোগ্রাফারদের জন্য অনলাইনে ইনকাম করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।

ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে কয়েকটি হলো:

ভিডিওগ্রাফি হন তবে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সাইট হলো:

7. eBook বিক্রি:

eBook হলো ইলেক্ট্রনিক বই অর্থাৎ একটি পিডিএফ ফরমেট সিস্টেম। আপনি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে একটি ই-বুক তৈরি করে তা মার্কেটপ্লেসে লিস্টিং করতে পারবেন। ই-বুক লিস্টিং করার সময় আপনার ই-বুকের একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারিত করে দিবেন, যখন কেউ এটি ডাউনলোড করবে তখনই আপনি ইনকাম করবেন।

বর্তমানে ই-বু্ক এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আপনি যদি এমাজন ইকমার্স ওয়েবসাইটে গিয়ে eBook সার্চ দেন তাহলে দেখতে পাবেন হাজার হাজার ই-বুক লিস্টিং করা আছে। শুধু ই-বুক বিক্রি করেও অনেকে ভালো পরিমানে অনলাইনে ইনকাম করতে সক্ষম হচ্ছে। তাছাড়াও আপনি শুধু eBook কভার ডিজাইন করেও অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। ফাইভারের অনেক গিগ রয়েছে যেগুলি শুধুু eBook কভার ডিজাইন করে। সুতরাং, eBook কভার ডিজইন করেও অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।

8. e-commerce (ই-কমার্স):

ই-কমার্স বর্তমানে খুবই একটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। অনলাইনে কেনাকাটার কথা মাথায় আসলেই ই-কমার্স চলে আসে। উদাহরণস্বরুপ: বাংলাদেশে আমরা অনলাইনে কেনাকাটার জন্য দারাজ, ইভ্যালি, চালডাল ইত্যাদি ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকি। এসবগুলি ওয়েবসাইটই ই-কমার্স ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। বর্তমান সময়ে মানুষ সময় বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস অনলাইনে ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছে, তাছাড়া মানুষ দিন দিন অনলাইনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনলাইনে কেনাকাটির জন্য বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করছে।

ই-কমার্স শুরু করতে চাইলে আপনাকে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। চাইলে আপনি এবং আপনার বন্ধুরা মিলে শুরু করতে পারেন। ই-কমার্স ব্যবসায়ের জন্য আপনার একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন এবং ওয়েবসাইটে আপনার প্রোডাক্ট লিস্টিং করতে হবে। আপনার গ্রাহক বা কাস্টমাররা আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহার করে প্রোডাক্ট অর্ডার করবে। গ্রহকদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে হলে আপনাকে সঠিক সময়ে ভালো মানের পণ্য ডেলিভারি করতে হবে। জনপ্রিয়তা বেড়ে গেলে আপনার ই-কমার্স ব্যবসায়ের ইনকামও বাড়বে।

e-commerce/ই-কমার্স ব্যবসায়ে অনেক ঝুঁকি রয়েছে তাই ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে অবশ্যই বাজার চাহিদা গবেষণা করতে হবে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ই-কমার্স ব্যবসায়গুলি যেমন: দারাজ, ইভ্যালি, চালডাল ইত্যাদি।

Conclusion:

অনলাইনে ইনকাম আপনাকে কিছু বাড়তি অর্থ উপার্জনে সহায়তা করতে পারে এবং ইনকামের মাধ্যমে আপনি আরও আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেন। যদিও বর্তমানে অনলাইনে ইনকাম করা খুব সহজ হয়ে উঠেছে এবং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ রয়েছে আয় করার, তবে আপনার অবশ্যই প্রযুক্তিগত জ্ঞানা থাকা প্রয়োজন। আমরা এই আর্টিকেলটিতে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি, আপনি যদি যেকোনো একটি কাজকে বেছে নিয়ে ৪/৫ মাস সময় দিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, তাহলে আপনি সত্যিই সফলতা পাবেন এবং আপনার অনলাইনে ইনকাম শুরু করতে পারবেন। আমরা যে ভুলটা করি তাহলো একসাথে অনেকগুলি মাধ্যম থেকে ইনকাম করার চেষ্টা।

উপরের সবগুলি দক্ষতা থেকে যেকোনো একটি বেছে নিয়ে কাজ করুন, দেখবেন সঠিক সময়ে সফলতা আসবে তাছাড়া উপরের অনলাইনে ইনকাম করার যে উপায়গুলি বলছি এগুলি শিখার মাধ্যমে আপনার একজন্য উদ্যোক্তাও হওয়ার সুযোগ রয়েছে যেমন: গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ফার্মও দিতে পারবেন যদি আপনি ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।

যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না😊।


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

x
Share via
Copy link