শিল্পের বৈশিষ্ট্য সমূহ কি কি?

শিল্পের বৈশিষ্ট্য সমূহ কি কি?

আমরা জানি, প্রকৃতি পদত্ত সম্পদকে রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে মানুষের ব্যবহারের উপযোগি পণ্যে রূপান্তর করাকে শিল্প বলে। শিল্প উৎপাদনের সাথে জড়িত যা মানুষের চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পণ্য তৈরি করছে।

শিল্পের বৈশিষ্ট্য সমূহঃ

১. কেন্দ্রীভূত কার্য:

শিল্প যেহেতু উৎপাদনের সাথে জড়িত তাই সাধারণত শিল্প একটি নির্দিষ্ট স্থানে কেন্দ্রীভূত থাকে। যেমন: আলেখারচর বিশ্বরোড, কুমিল্লা একটি কোকা কোলা কোম্পানির উৎপাদন কেন্দ্রে অবস্থিত যেখানে কোম্পানিটি তাদের পানীয় পণ্য উৎপাদন করে। পরবর্তীতে উৎপাদিত পণ্য সারাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হয়। সুতরাং শিল্প একটি কেন্দ্রীভূত কার্য।

২. উৎপাদনকারী শাখা:

আমরা সবাই জানি শিল্প উৎপাদনের সাথে জড়িত। এই জন্যই শিল্পকে উৎপাদনকারী শাখা বা উৎপাদনের বাহন বলা হয়। গ্রহকদের চাহিদা মেটানোর জন্য শিল্প নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করছে। যেমন: পোশাক, পানীয়, সিরামিকস, কাগক, টেক্সটাইল, ফার্নচার, খাদ্য ও পানীয়, লোহা ও ইস্পাত ইত্যাদি পণ্যসামগ্রী শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়।

৩. শিল্প রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে: 

প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ সংগ্রহ করে তাকে নতুন রূপে রূপান্তর করে মানুষের ব্যবহারের পণ্যে উপযোগি করা শিল্পের কাজ। উদাহরণ: বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন রূপে রূপান্তর করা অর্থাৎ কাঠ থেকে বিভিন্ন ধরণের ফার্নচার তৈরি যেমন: চেয়ার, টেবিল, খাট, আলমারি ইত্যাদি। তাই বলা হয় শিল্প রূপগত উপযোগ সৃষ্টি করে।

৪. পরিবর্তনশীলতা:

শিল্প যেহেতু প্রাকৃতিক সম্পকে, আবার অর্ধপ্রস্তুত পণ্য বা সম্পন্ন পণ্যকে অন্যান্য পণ্যে রূপান্তর কারা কাজে নিয়োজিত থাকে। তাই বলা হয় শিল্প সম্পদের পরীবর্তনের সাথে জড়িত।

৫. মুনাফা লাভে বিলম্ব: 

শিল্প যেহেতু উৎপাদনের সাথে জড়িত তাই শিল্পকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, শ্রমিক ও কাঁচামাল ইত্যাদি উপকরণ যোগাড় করতে সময় লাগে। পরবর্তীতে পণ্য উৎপাদন করার সাথে সাথেই মুনাফা আসে না। উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বাজারজাত করে বিক্রয় বৃদ্ধির করার মাধ্যমে শিল্প মুনাফার মুখ দেখে। তাই শিল্পে মুনাফা লাভে বিলম্ব হয়ে থাকে।

৬. অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবেশ পথ:

শিল্প যে কোনও জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, শিল্প ছাড়াও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অসম্ভব। শুধু কৃষির উপর নির্ভর করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের দেশে শিল্পের বিকাশের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কারন আমাদের দেশ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। দেশে যখন শিল্পের বিকাশ ঘটে তখন সেখানে বড় পুঁজির বিনিয়োগ হয়, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয়,  এবং বৃহত্তর শ্রম বাজার সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ, উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং  জাতীয় আয়ও বৃদ্ধি পাবে। তাই শিল্পকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবেশ পথ বলা হয়।

Comments

One response to “শিল্পের বৈশিষ্ট্য সমূহ কি কি?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

x
Share via
Copy link