কালের প্রবাহে মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে যার ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আওতাও বাড়তে থাকে। প্রাথমিক দিকে মানুষ কৃষি কাজ, পশু শিকার, খাদ্যশস্য উৎপাদন ও পণ্যসামগ্রী বিনিময় করতো। কিন্তু সময় অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে মানুষের চাহিদা বাড়তে থাকে যার ফলে বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে প্রচলন হয় রৌপ্যের মুদ্রা ও কাগজি মুদ্রা।
আধুনিক বাণিজ্য ও ব্যবসায়ের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ধারা উদ্ভব হয় মানুষের বিভিন্ন স্তরের সভ্যতা থেকে। যেমন: মানুষের মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা এই চাহিদাগুলি পূরণ করার জন্য মানুষ সভ্যতার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিলো।
ব্যবসায়ের ক্রমবিকাশের ধারাকে ৩ ভাগে বিভক্ত করা যায়:
- প্রাচীন যুগ
- মধ্য যুগ
- আধুনিক যুগ
ব্যবসায়ের ক্রমবিকাশের ধারা প্রাচীন যুগ:
- দ্রব্য বিনিময় প্রচলন ছিল।
- কৃষিকার্যের সাথে জড়িত ছিল।
- পশু শিকার, মৎস্য শিকার ও ফলমূল আহরণ করতো।
- মূলত প্রাচীন যুগে মানুষ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিল। যেমন: কাঠ, ফল সংগ্রহ ও মাছ ধরা ইত্যাদি।
ব্যবসায়ের ক্রমবিকাশের মধ্য যুগ:
- বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে দুষ্প্রাপ্য শামুক, ঝিনুক, কড়ি ও পাথরের ব্যবহার শুরু হয়।
- বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে স্বর্ণ, রৌপ্য ও অন্যান্য ধাতব মুদ্রার ব্যবহার শুরু হয়।
- মধ্য যুগে কগজি মুদ্রার প্রচলন হয়েছিলো।
- বাজার ও শহর সৃষ্টি হয়েছিলো।
- ব্যবসায় সংগঠনের উদ্ভব হয়।
ব্যবসায়ের ক্রমবিকাশের আধুনিক যুগ:
- শিল্প বিপ্লব ও প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন হয়।
- ব্যাংকিং ও বিমা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ হয়।
- বিভিন্ন শিল্প কারখানার বিকাশ হয়।
- বৃহদায়তন উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়।
- এটিএম কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয়।
ব্যবসায়ের প্রাচীন যুগ মানব সভ্যতার শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল যেখানে দ্রব্য বিনিময় প্রথা চালু ছিল। প্রাচীন যুগে মানুষ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রধান পেশা ছিল বন থেকে কাঠ সংগ্রহ, মাছ ধরার ও ফল সংগ্রহ করা। মধ্য যুগে,ব্যবসায়ের উৎপাদনএবং বিতরণ সিস্টেমের উন্নতি করা হয়েছিল। বার্টার সিস্টেম বা বিনিময় প্রথা খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এসময় কৃষক, জেলে এবং অন্যান্য পেশার লোক তাদের নিজস্ব ক্ষেত্রের দক্ষতা প্রমাণ করেছে।
ব্যবসায়ের আধুনিক যুগ শিল্প বিপ্লব থেকে শুরু হয়েছিল এবং এখনও অব্যাহত রয়েছে। ব্যবসায়ের আধুনিক যুগে প্রচলন হয় বিভিন্ন ধরনের শিল্প সরঞ্জাম, মেশিন। আধুনিক যুগে লোকেরা অনুভব করেছিল যে তাদের জন্য বিনিময় প্রথার ব্যবস্থা যথেষ্ট নয় যার ফলে অর্থ বিতরণ, অর্থ হস্তান্তর করার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থ বাজারের প্রচলন হয়।
Leave a Reply